পথভোলা মুসাফির

লিখেছেন লিখেছেন একপশলা বৃষ্টি ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:৪২:৫১ দুপুর

3য়....

বদরের কথাগুলোতে মনে হল, আব্দুর রাহমান বিন মুআবিয়ার যথেষ্ট পরিমাণ আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। প্রত্যাশাও বেড়ে গেছে বহুগুণে। তাঁর চোখমুখে খুশির আবেশ ছড়িয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ গভীর মনোযোগে বদরের দিকে তাকিয়ে রইলেন। এরপর বলতে লাগলেন,

“বদর! প্রিয় ভাই আমার, তুমি ঠিকই বলেছ। আমরা এখান থেকে ফিলিস্তিন হয়ে আফ্রিকা অভিমুখে রওয়ানা হব। আমার আশা, একদিন না একদিন পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে আসবে, ইনশাল্লাহ।”

সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবার পর কাপড় শুকানো পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করলেন। কাপড় শুকিয়ে গেলে ভাজ করে থলেতে ভরে নিলেন। এরপর সেখান থেকে রওয়ানা হলেন। পায়ে হেঁটেই ফিলিস্তিনের দিকে যাত্রা করলেন। রাস্তায় প্রথমে যে সরাইখানা পাওয়া গেল সেখানে বিশ্রাম নিলেন। খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করলেন। দুটি ঘোড়াও ক্রয় করে নিলেন। এরপর দ্রুতবেগে সফর করে প্রথমে ফিলিস্তিন অতঃপর মিশর অভিমুখে রওয়ানা হলেন।

এ যাত্রায়ও আব্দুর রাহমান ও বদরের পিছনে দুর্ভাগ্য তাড়া করে ফিরল। সেসময় আব্দুর রাহমান বিন হাবিব আফ্রিকা শাসন করত। তাঁরই ছেলে ইউসুফ বিন আব্দুর রাহমান আন্দালুসের শাসক ছিল। এরা দুজনই আব্বাসী শাসকদের আনুগত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং স্বাধীন শাসক হিসেবে আফ্রিকা ও আন্দালুসের শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকে।

বলা হয়ে থাকে, সেখানে আব্দুর রাহমানের আগমণের পূর্বেই এক ইহুদি গণক আফ্রিকা শাসক আব্দুর রাহমান বিন হাবিবের কাছে আসে। সে সংবাদ দেয়, অচিরেই এই আকৃতির এক উমাইয়্যা শাহজাদা আফ্রিাকার ভূমিতে পা রাখবে। একদিন সে আন্দালুসের বাদশাহ হবে।

আব্দুর রাহমান ও বদর আফ্রিকা প্রবেশের সাথে সাথে বাদশাহের কাছে খরব পৌঁছে গেল। সে আব্দুর রাহমান বিন মুআবিয়া ও বদরকে গ্রেফতার করল। এরপর ঐ ইহুদি গণককে ডেকে উপস্থিত করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, ইনিই কি সেই লোকÑযে আগমী দিনে আন্দালুসের বাদশাহ হবে?

বলা হয়ে থাকে, ঐ ইহুদি অত্যন্ত কৌশলী ভাষায় জবাব দিল। বলল,

“আপনি যদি আমার ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করে থাকেন, তবে এ বাণীতে দু‘টি দিক পাওয়া যায়Ñ

এক. ইনি সেই লোক নন। এ ক্ষেত্রে আপনি অযথা একজন মানুষকে হত্যা করতে গেলেন।

দুই. ইনিই সেই লোকÑযে আন্দালুসের বাদশাহ হবে। এ অবস্থায়, এটা লোকটির তাকদিরে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। আপনি চাইলেও তাকদির পরিবর্তন করতে পারবেন না।

ইহুদি গণকের জবাব শুনে আব্দুর রাহমান বিন হাবিব অস্বস্তিতে পড়ে গেল। সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে লাগল। এই সুযোগে আব্দুর রাহমান ও বদর দরবার থেকে বেরিয়ে এলেন। তারা চলে আসার পর বাদশাহের খেয়াল হল, এ লোকটি বেঁচে থাকলে তাঁর ছেলে ইউসুফ আন্দালুসের শাসন ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে! এই চিন্তা থেকে সে আবারও আব্দুর রাহমান ও বদরকে খুঁজে পেতে মরিয়া হয়ে উঠল।

এদিকে আব্দুর রাহমান ও বদরও এই ব্যাপারে অবগত হয়ে গেলেন। এর ফলে তাঁরাও ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে চলে গেলেন। আফ্রিকার শাসক তাঁদের ধরার জন্য নিজের স্পাই বা গোয়েন্দাদের মাঠে ছড়িয়ে দিল। সেই সাথে কঠোর নির্দেশ দিল, যেকোনো অবস্থায় এঁদের খুঁজে বের করতে হবে। এঁদের ধরে দেবার জন্য বিরাট অংকের আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করা হল।

এরপর থেকে আব্দুর রাহমান ও বদরের জন্য আফ্রিকার পরিস্থিতি দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। আব্দুর রাহমান বদরকে নিয়ে নিজের মাতৃকোল বারবারোজ গোত্রগুলোর মাঝে একজায়গা থেকে আরেক জায়গায় আশ্রয় নিয়ে দিনাতিপাত করছিলেন। বলা হয়ে থাকে, আব্দুর রাহমান ও বদর এই গোত্রগুলোর মাঝে একাধারে পাঁচ বছর পর্যন্ত আত্মগোপন করে থাকেন। একপর্যায়ে ওরা শাবতা শহরে গিয়ে পৌঁছান।

একদিন পড়ন্ত বিকেল। আব্দুর রাহমান ও বদর শাবতা শহরের পার্শ্ববর্তী একটি নদীর তীরে বসে আছেন। শিশু সুলাইমানকে নিরাপদ স্থানে রেখে এসেছেন। হঠাৎ সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আব্দুর রাহমান চমকে উঠলেন। বদরের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,

“বদর! এই মুহূর্তে আমার মাথায় একটা ভালো ধারণা এসেছে। আমার মন বলছে, এ পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারলে আমাদের দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে। সেই সাথে অতীতের দুঃখ-বেদির উপর সুন্দর আগামীর সুরম্য প্রসাদও নির্মাণ হয়ে যেতে পারে।”

আব্দুর রাহমানের কথায় বদরের চোখমুখে খুশির আভা দেখা দিল। জিজ্ঞেস করল,

“বলুন, কী ব্যাপার?”

“বদর! এখন পর্যন্ত আমরা দুজন দ্বারে দ্বারে ধোঁকা খেয়ে বেড়াচ্ছি।” আব্দুর রাহমান বদরের দিকে চেয়ে উদাসী কণ্ঠে শুরু করলেন,

“কিন্তু কোথাও সফলতার কোনো সম্ভাবনা দেখতে পেলাম না। আমরা আফ্রিকাতেও নিরাপদ নই। এখানকার শাসক তাঁর সশস্ত্র বাহিনীকে আমাদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। যেদিন আমরা ওদের হাতে ধরা পড়ব, মনে রাখবে, আফ্রিকার শাসক আমাদের নির্মমভাবে হত্যা করাকে নিজের জন্য গর্বের বিষয় মনে করবে। আমি আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে আন্দালুসের দিকে যাত্রা করতে চাচ্ছি। আমার মনে হয়, সেখানে আমরা ভালো অবস্থান তৈরী করে নিতে সক্ষম হব।

বদর! আমি জানি, আন্দালুসে আফ্রিকার শাসক আব্দুর রাহমান বিন হাবিবের ছেলে ইউসুফ শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত আছে। সেও তার বাবার মতোই আচরণ করবে। তবে আশার কথা হল, সেখানে বেশকিছু আরব গোত্রও বসবাস করছে। যাদের সহযোগিতায় আন্দালুসের মাটিতে বনু উমাইয়্যার খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।”

বদরের চোখমুখে তৃপ্তির নিদর্শন স্পষ্ট হয়ে উঠল। জবাব দিল,

“আমি আপনার এই মতামতের সাথে সম্পূর্ণ একাত্মতা পোষণ করছি। কিন্তু এ কাজ করতে হলে আমাদের তাড়াহুড়া করলে চলবে না। এখানে অবস্থানকালীন প্রায় সময়ই আমি লক্ষ করে দেখেছি, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এখানকার লোকেরা আন্দালুস এবং আন্দালুসের লোকেরা এখানে যাওয়া-আসা করে। আমীর! আজকের পর আপনি ঘর থেকে খুব একটা বেরোবেন না। আমি প্রথমে আন্দালুস থেকে আসা লোকদের সাথে কথা বলে সেখানকার পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করব। সবকিছু ভালোভাবে জেনে নেবার পর আপনার পক্ষ থেকে দূত হয়ে আন্দালুস সফরে বেরোব। সেখানকার গোত্রপতিদের সাথে যোগাযোগ করব। তাদের কাছে আপনার পরিচয় তুলে ধরব। পরিস্থিতি আপনার অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। আমার কাজ সফল হয়ে গেলে অতিদ্রুত ফিরে এসে আপনাকে নিয়ে যাব। আমার আশা, যদি যথাযথভাবে কাজটা আদায় করতে পারি তবে আন্দালুসের মাটিতে সফলভাবে পাকাপোক্ত অবস্থান করে নিতে পারব।”

আব্দুর রাহমান বদরের এই মতামতকেও পরিপূর্ণ সমর্থন করলেন। এরপর দুজনে নিজেদের আশ্রয়গৃহের দিকে রওয়ানা হয়ে গেলেন। বদর পরদিন থেকেই নিজের কাজ শুরু করে দিল। সে প্রায় রাতেই নদী-তীরের দিকে যায়। যেখানে আন্দালুসের জাহাজ এসে নোঙর করে সেখানে গিয়ে দাঁড়ায়। আগন্তুক ব্যবসায়ীদের থেকে আন্দালুসের পরিস্থিতি জেনে নিতে চেষ্টা করে। একদিন এশার ওয়াক্তের কাছাকাছি সময়ে বদর প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষ করে আব্দুর রাহমানের কাছে ফিরে আসছিল। হঠাৎ থমকে দাঁড়াল। তার কানে একটি মেয়েলী কণ্ঠের আর্তচিৎকার ভেসে এল। কাছের কোনো উৎস থেকে বিকট শব্দ। তীব্র যাতনায় বুক ফেটে আর্তচিৎকার বেরিয়ে আসছে। মেয়েটি শরীরের সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করে প্রাণপণে চিৎকার করছে বলেই মনে হল।

মিহি কণ্ঠ, তবে কিছুটা ভরাট। মেয়েটি যুবতীÑকণ্ঠ শোনেই বোঝা যাচ্ছে। তার কথাগুলো থেকে ক্ষোভের ঝাঁঝ টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভাষার শালিনতা অটুট রেখেছে। সর্বশক্তিতে কাউকে চিৎকার করে বলছে,

“তোমাদের খোদার কসম! আমাকে ছেড়ে দাও। আমাকে বাজারে তুলে কি লাভ হবে তোমাদের? আমাকে না পেলে মা-বাবা অস্থির হয়ে যাবেন। ছোট ভাইটি পাগল হয়ে যাবে। আমি তোমাদের সবার পায়ে পড়ছি। তোমাদের কাছে মিনতি করছি। আমাকে বিক্রি করো না। দয়া করে আমাকে ছেড়ে দাও। মা-বাবার কাছে যেতে দাও।”

মেয়েটির কথাগুলো বদর স্পষ্ট শোনতে পাচ্ছে। সে নিজেকে সামলে রাখতে পারল না। ক্ষোভের আতিশয্যে একঝটকায় তরবারি কোষমুক্ত করে নিল। এরপর যেদিক থেকে আওয়াজ আসছিল, সেদিকে ছুটে গেল। দেখল, তিনজন লোক একটি মেয়েকে টেনেহেঁচড়ে অগ্রসর হচ্ছে। লোকগুলোকে দেখামাত্র বদরের কণ্ঠ গর্জে উঠল,

“দাঁড়াও...! মেয়েটিকে ছেড়ে দাও। নচেৎ নির্ঘাত মারা পড়বে।”

হঠাৎ কারো উপস্থিতিতে চমকে উঠল ওরা। অযাচিত হুমকির জবাবে দ্রুত নিজেদের তরবারিগুলো কোষমুক্ত করে নিল। মেয়েটিকে ছেড়ে দিয়ে সম্ভাব্য হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত হয়ে দাঁড়াল। এই সুযোগে মেয়েটি দৌঁড়ে বদরের কাছে এসে আশ্রয় নিল। কাছে এসেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল। দুই হাত জোড় করে সাহায্যের জন্য মিনতি করতে লাগল।

বদর মেয়েটির দিকে তাকাল। বাড়ন্ত বয়সের এক যুবতী মেয়ে। যেমন দেহাবয়ব, তেমনি রূপ। নিষ্পাপ চেহারার একটি সাদাসিধে মেয়ে। কোনো ধনীর দুলালী বলেই মনে হল। বদর মেয়েটিকে সম্ভোধন করে জানতে চাইল,

“এরা কারা? কী চায় তোমার কাছে?”

বেচারি কেঁদে ফেলল। অশ্রু-ভারাক্রান্ত কণ্ঠে জবাব দিল,

“এরা জুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে আমাকে পিষ্ট করতে নিয়ে যাচ্ছে। এরা সবাই আমার নিকটাত্মীয়ও বটে। আমাকে আন্দালুস থেকে উঠিয়ে এখানে নিয়ে এসেছে। তারা চাচ্ছে, প্রথমে নিজেরা আমার ইজ্জত লুটে নিয়ে আমাকে পদদলিত ফুলের ন্যায় নোংরা করে ফেলবে। এরপর কারও কাছে বিক্রি করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেবে।”

বদর মেয়েটির দিকে না তাকিয়েই গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

“তুমি কোনো চিন্তা করো না। এখন থেকে এরা তোমাকে বেচতেও পারবে না। তোমার পবিত্রতার অলংকারে কলঙ্কের আঁচড়ও লাগাতে পারবে না। আমি ওদের অনুমতি দিচ্ছি, যেদিক থেকে এসেছে সেদিকেই যেন ফিরে যায়। আমি যা বলছি এর একটুও ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করা হলে সবার মাথা কেটে মাটিতে নামিয়ে দেব।”

ওরা তিনজন লোক। ততক্ষণে কাছে চলে এসেছে। একজন বদরকে সম্ভোধন করে বলল,

“হে অপরিচিত নওজোয়ান! আমরা জানি না তুমি কে! এই মেয়েটি আমাদের নিকটাত্মীয়। ওর সাথে আমাদের কী হচ্ছে না হচ্ছেÑসেটা কেবল এই মেয়েটি আর আমরা জানি। তুমি আমাদের মাঝে নাক গলাতে এসো না। এতে নিজের প্রাণের স্পন্দন, আত্মার বন্ধন, অন্তরের প্রশান্তি আর ইন্দ্রিয় অনুভুতিগুলো থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে।”

জবাবে বদর নিজের উন্মুক্ত তরবাবি শুন্যে উঁচিয়ে ধরল। পিঠে বেঁধে রাখা ঢালও হাতে তুলে নিল। এরপর আগের চেয়েও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে, উত্তপ্ত কণ্ঠে গর্জে উঠল,

“আরামের জীবনে দুুঃখ-দুর্দশার তুফান টেনে দাঁড় করানো নির্বোধেরা, ভোগ-বিলাসের যিন্দেগীতে ধোঁকা-প্রতারণা আর স্বজনপ্রীতির বিষবাষ্প ছড়ানো হিংসুকেরা, হিম্মত থাকলে আমার সাথে মোকাবেলা করে দেখ। আমি এই অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া আকাশের নিচে তোমাদের দেহগুলো কচুকাটা করে স্তুপাকারে রেখে দেব। তোমাদের প্রাণের কুটিরে মৃত্যুর ভয়াল বার্তা পৌঁছে দেব। এগিয়ে এসো। সামনে বাড়ো। আমার সাথে মোকাবেলার সূচনা করো। এরপর দেখ, তোমাদের জীবন-ভেলায় কিভাবে পতন, স্খলন, বিচ্ছেদ আর বিরহের বেদনা সওয়ার করিয়ে দেই।”

ওরাও নিজেদের মাঝে পরামর্শ করে নিল। দ্রুত তলোয়ার তাক করে মার-কাটারি ভঙ্গিমায় অগ্রসর হল। লাগামহীন বুভুক্ষ কুকুরের হিং¯্রতা আর পিশাচের ঔদত্য নিয়ে বদরের উপর একসাথে হামলে পড়ল।

বদর ওদের আক্রমণগুলো প্রতিহত করার সাথে সাথে দুর্ভেদ্য আঁধার, ঘৃণার পাহাড়, ধূলিঝড়ের ঘূর্ণি আর সিংহের গর্জন তুলে আঘাতের পর আঘাত করতে লাগল।

বেশকিছুক্ষণ ধরে নদীর ধারে এই প্রাণসংহারী তুমুল লড়াই চলতে থাকল। এরপর এক ভয়ানক আর্তচিৎকার ভেসে এল। ওদের একজন মৃত্যুর হাতে আত্মসমর্পন করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। বাকি দুজন চমকে উঠে নিহত সাথীর দিকে তাকাল। ঠিক এই মুহূর্ত আরেকজনের জন্য মৃত্যুর বার্তা বয়ে নিয়ে এল। চোখ ফিরানোর আগেই ওর উপর বদরের তলোয়ার আছড়ে পড়ল। সাথে সাথে সেও মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়ল। অন্যজন নিজেকে নিঃসঙ্গ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রাণপণে ছুটে পালাল। বদরও ওর পিছনে ছুটে গেল। দূরত্ব কমিয়ে এনে ওকে তাক করে ঠিক পিঠ বরাবর তলোয়ার ছুড়ে মারল। দেখতে না দেখতেই তলোয়ারের মাথা পিছন দিকে ঢুকে কলিজা ভেদ করে বেরিয়ে গেল। এ লোকটিও মুখ থুবড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। বদর এগিয়ে গিয়ে তলোয়ার টেনে বের করল। ওর জামার আস্তিনে ঘষে ঘষে রক্ত পরিষ্কার করে নিল।

চলবে...

বিষয়: বিবিধ

৯৭০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

359824
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৩০
শেখের পোলা লিখেছেন : চলুক৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File